UPS vs IPSঃ পার্থক্য, জানার জন্য

Electrometa-welcome here


১। পার্থক্য
২।কোনটা দিয়ে কি চালানো যায়?
৩। ভারী পাওয়ার ব্যাকাপ কে দেয়?
৪। ভোল্টেজ ফ্লাকচুয়েশন কার বেশী?
৫। কোনটির সার্কিট জটিল ?


DIFFERENCE
UPS:

IPS:

1.    নাম
Uninterrupted Power Supply
Instant Power Supply
2.     মেকানিজমঃ
ইউপিএস এ সাধারনত প্রথমে মেইন থেকে সরাসরি ইউপিএস এ কারেন্ট সাপ্লাই হয়। এই কারেন্ট এসি থেকে ডিসি তে কনভাট হয় এবং ধারাবাহিকভাবে ব্যাটারীকে চাজ করে। চাজিত ব্যাটারী থেকে পাওয়ার যায় সাইন ওয়েভ ইনভাটারে যেখানে ডিসি কনভাট হয়ে আবার এসি পাওয়া যায়। এই এসি থেকেই আমরা পিসি তে পাওয়ার পাই।
আইপিএস এ সরাসরি ইনভাটারে মেইন সাপ্লাই কারেন্ট যায়। এই মেইন সাপ্লাই একই সময়ে আউটপুটেও যায়। অর্থাত একই সময়ে মেইন সাপ্লাই ব্যাটারী চাজ করে এবং আউটপুটে পাওয়ার দেয়। আইপিএস এ একটি সেন্সর এবং রিলে মেকানিজম থাকে যেটি কিনা সব সময়ই চেক করে যে মেইন সাপ্লাই থেকে পাওয়ার আসছে কিনা। যখনই মেইন এ পাওয়ার অফ হয়ে যায় তখনই এটি ট্রিগার করে ব্যাটারী থেকে চার্জ নেয়া শুরু করে।
3.     পাওয়ার ব্যাকাপ

১০মিলিসেকেন্ড এ পাওয়ার ব্যাকাপ দিয়ে থাকে।


কিন্তু এর ব্যাকাপ পাওয়ার দিতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগে, এবং তা হতে পারে ৫০০মিলিসেকেন্ড-১সেকেন্ড এর কাছাকাছি।

4.     ফেজ

শুধুমাত্র ১- ফেজ


থ্রি-ফেজ ও হতে পারে।

5.     ক্যাপাসিটি

ক্যাপাসিটি কম তুলনামূলক


ক্যাপাসিটি বেশি ইউপিএস থেকে।

6.     ম্যাক্স পাওয়ার
ম্যাক্স পাওয়ার ২-কেভিএ পর্যন্ত

ম্যাক্স পাওয়ার ১৬-কেভিএ পর্যন্ত

7.     আউটপুট ওয়েভ
স্কোয়ার ওয়েভ
স্টেপ ওয়েভ
8.     ব্যাটারি সাইজ

ব্যাটারি কম মানের দরকার হয়।


ব্যাটারি বড় মানের দরকার হয়।

9.     রিসেট বা রিস্টার্ট
নো রিসেট, রিস্টার্ট  নিডেড।

রিসেট কিংবা রিস্টার্ট হতে পারে যন্ত্রপাতি।
10.  লাইনের ভোল্টেজ

ভোল্টেজ ২২০ ভোল্ট এ সেট করা থাকে সবসময়।

মেইন লাইনের সমান ভোল্টেজ পাওয়া যায়।
11.  চালানো যাবে

ইউপিএস শুধুমাত্র একটি ডিভাইস অপারেট করতে পারে, যেমন : কম্পিউটার

আইপিএস একের অধিক যন্ত্রপাতির জন্যে ব্যবহার করা যায়
যেমন: টিভি, ফ্যান, লাইট, কম্পিউটার ইত্যাদি।
12.  সার্কিট

সিম্পল

জটিল
13.  ভোল্টেজ ড্রপ

পাওয়ার বা ভোল্টেজ ড্রপ আছে, যা যন্ত্রপাতির জন্যে ক্ষতিকর।

পাওয়ার বা ভোল্টেজ ড্রপ আছে, যা যন্ত্রপাতির জন্যে ক্ষতিকর।
14.  ব্যয়

কম

তুলনামূলক অনেক বেশি

কি পরিমাণ ইলেক্ট্রিক্যাল শক খেলে কি পরিমাণ ক্ষতি হবে????

Electrometa-welcome here

SHOCK


কি পরিমাণ ইলেক্ট্রিক্যাল শক খেলে কি পরিমাণ ক্ষতি হবে????

মানবদেহের উপর কারেন্ট এর প্রভাব কয়েকটি ফ্যাক্টর এর উপর ডিপেন্ড করে থাকে:
  1. - ভোল্টেজ
  2. - কারেন্ট প্রবাহের সময়
  3. - কারেন্টের মান
  4. - ফ্রিকোয়েন্সী
  5. - কারেন্ট প্রবাহের পথ
  6. - মানুষটির রিয়্যাক্ট করার ক্ষমতার উপরে
শুকনা জায়গায় ৫০ভোল্ট পর্যন্ত সেফ, ভেজা জায়গায় সেটা হয়ে যায় ২৫ ভোল্ট অবশ্যই এসির ক্ষেত্রে
ডিসির ক্ষেত্রে সেটা ১২০ভোল্ট, সরাসরি কিংবা আলাদা সংস্পর্শে আসলে।


ফ্রিকোয়েন্সী বাড়ার সাথে সাথে দেহের মধ্যে দিয়ে কারেন্ট প্রবাহের ফলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেকাংশে কমে যায়।

৫০-৬০হার্জ এর এসি কারেন্ট,  সমপরিমাণ ডিসি কারেন্ট অপেক্ষা অধিক ক্ষতিসাধন করে থাকে।
ছবিতে তাদের মাত্রা দেখানো হয়েছে:


 AC and DC Shock Comparison & its effect on human body


দেহের মধ্যে দিয়ে কি পরিমাণ কারেন্ট যাবে তা নির্ভর করে দেহের রোধ এর উপরে। দেহের রোধ আবার বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে:

  1. - আর্দ্র চামড়া
  2. - কনট্যাক্ট পয়েন্ট এ চামড়ার পুরুত্ব
  3. - ওজন
  4. - বয়স
  5. - লিঙ্গ
হার্টের মধ্যে দিয়ে যাওয়া কারেন্ট সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে, কারণ হৃদপিন্ডের নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সী আছে, মিনিটে ৭২ বার, ৫০-৬০ হার্জের কারেন্ট গেলে মিনিটে হৃদপিন্ডের কম্পন্ন সংখ্যার তারতম্য ঘটে, ফলে হার্ট ফেইলার ঘটে।
current & resistance in different parts of BODY

যেসকল সমস্যার দেখা দেয় তা হল:


  1. - লুজ মোশন
  2. - শ্বাস কষ্ট
  3. - ব্যাথা
  4. - শারীরিকভাবে ক্লান্তি
  5. - ভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলেশন
  6. - কার্ডিয়াক অ্যারেষ্ট
  7. - জ্বালাপোড়া
ইলেক্ট্রিক্যাল শকের ফলে ঘটা ভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলেশন এর ফলে হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়, ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেষ্ট এবং ব্রেইনে সিগ্ল্যাল পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়, ফলে খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যু ঘটে।
জুল ইফেক্ট এর ফলেই শরীরে জ্বালাপোড়া ঘটে, আগুনে পুড়ে যাওয়ার মতই হয়.

সূত্রটি হল:
H= i^2*R*t
এখানে, H= উৎপন্ন তাপ

বার্নিং এর কিছু ডিগ্রি আছে, যেমন : ১ ডিগ্রি, ২ ডিগ্রি ৩ ডিগ্রি, এর মধ্যে ৩ডিগ্রি সবচেয়ে মারাত্মক।

ছবিতে দেখে নেন, বয়সের উপরে কিভাবে নির্ভর করে কত % বেচে থাকা যায়:

Chart: American Burn Association Study of Body burns due to Electric Shock


Fig: Current in various frequency 

Tests of Transformer

Electrometa-welcome here


ট্রান্সফর্মার নিয়ে তেমন কিছু না বলে সরাসরি এর টেস্ট এর বিষয়ে আলাপ শুরু করা যাক:

ট্রান্সফর্মার তার কার্যপদ্ধতি সঠিকভাবে সম্পন্ন করছে কিনা সেসব সম্পর্কে জানতে এসব টেস্ট করা হয়।
ট্রান্সফর্মার টেস্ট ৩ প্রকার:

- Type Test

- Special Test
- Routine Test


Type Test:

- এটি এমন ট্রান্সফর্মার টেস্ট যার সাহায্যে ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল।প্যারামিটার ঠিক আছে কিনা ও তাদের গুনগত মান ঠিকঠাক আছে কিনা সেসব দেখার জন্যে এই টেস্ট করা হয়ে থাকে।
Type Test এর মধ্যে রয়েছে:


√ Transformer Ratio Test
- Transformer winding resistance measurement
- Transformer vector group Test
- Impedance voltage/short ckt impedance and load loss measurement
- No-load Loss and current measurement
- Insulation Resistance measurement
- Transformer Di-electric Test
- Temperature Rising Test
- Load Tap changing Test
- Vaccum Test of Tank and Radiator


Routine Test:

- Transformer winding Resistance Test
- Phase to Phase coil winding Test of HT and LT side of Transformer
- Transformer Ratio  Test
- Transformer Vector group test
- Impedance voltage/short ckt impedance and load loss measurement
- Insulation Resistance measurement

Insulation resistance test of transformer

- Transformer Di-electric Test
- Load Tap changing Test
- Oil pressure Test
- No load Loss and current measurement


পার্থক্য হল Temperature Rising Test and Vaccum Test.


special Test :
- Di electric test
- 3phase Transformer and Zero sequence Impedance Test
- Short Circuit Test
- Noise level Testing
- No load current harmonic measurement
- Power measurement from Fan and Pump
- Buccholz relay,  Temperature Indicator, Pressure Relief Device and Oil Protection System Test



১১০০০/৪১৫ ভোল্টের থ্রি ফেজ ট্রান্সফর্মার এর ভোল্টেজ রেশিও ২৬.৫০৬.

ডাই ইলেক্ট্রিক টেস্ট করা হয় এর ইন্সুলেশন রেজিস্টেন্স মাপার জন্যে.মেগারমিটার দ্বারা এই পরীক্ষা করা হয়
Megger Meter


হাই ভোল্টেজ টেস্ট করা হয় ট্রান্সফর্মারের ভিতরে থাকা ডাই ইলেক্ট্রিক ম্যাটেরিয়াল এর শক্তি পরিমাপ করার জন্যে
ট্রান্সফর্মারে এটি ট্রান্সফর্মার ওয়েল নামে পরিচিত যার ডাই ইলেক্ট্রিক স্ট্রেন্থ ৪০-৭০কেভি পর্যন্ত হয়।
১১০০০/৪১৫ ভোল্টেজের স্টেপ ডাউন ট্রান্সফর্মারের ক্ষেত্রে HT সাইডে ১১০০০*২.৫= ২৭৫০০/২৮০০০V সাপ্লাই দেওয়া হয়।
৩৩ কেভি লাইনের ট্রান্সফর্মারের ক্ষেত্রে ৭০কেভি ভোল্টেজ দেওয়া হয়ে থাকে।
বাকিটেস্ট গুলো আগামী পোস্টে আসবে।


Stay tuned for Next Post

CT & PT: কার্যপ্রণালী

Electrometa-welcome here


*) CT & PT কি?
*)সাবস্টেশন লাইনে CT & PT কিভাবে কানেকশন করা হয়?
*) CT কত প্রকার ও কি কি?
*) CT 5P 20 30VA রেটিং মানে কি বোঝায়?
*) CT & PT কোন ধরনের ট্রান্সফরমার?
*) CT & PT এর পার্থক্য কি?
*) CT কোন ধরনের কারেন্ট পরিমাপ করে?
*) CT & PT তে কোন ধরনের রিলে ব্যবহার করা হয়?


#answers:

সিটি পিটির রহস্য
এইযে ট্রান্সমিশন লাইনে কয়েক কিলোভোল্ট থেকে কয়েকশ কিলোভোল্টের লাইন সঞ্চালিত হয়।কিভাবে এর ভোল্টেজ ও কারেন্টের মান মাপবোনর্মাল অ্যামিটার ভোল্টমিটার লাইনে ধরার আগেই কুপোকাত।দুই উপায়ে এটা পরিমাপ করা যেতে পারে
- বড় রেঞ্জের ইন্সট্রুমেন্ট ইউজ করা যেতে পারে, যা একাধারে বিশালাকার+ ব্যয়বহুল
-  এসি কারেন্ট ও ভোল্টেজের ট্রান্সফর্মেশন শর্ত  কাজে লাগিয়ে ট্রান্সফর্মার দ্বারা উচ্চ ভোল্টেজ ও কারেন্টের মান কমিয়ে আনা, অব্যশই সেকেন্ডারীতে কয়েল এর পাক সংখ্যা সে অনুপাতে জানা থাকতে হবে।
তাহলে আমরা নর্মাল রেঞ্জের ইন্সট্রুমেন্ট দিয়েই ভোল্টেজ ও কারেন্ট পরিমাপ করতে পারবো। পাক সংখ্যা সঠিক জানা থাকা বাঞ্ছনীয়।

এটাই সিটি পিটির কার্যপ্রণালী।
চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে হিসাব নিকাশ হয়।

- সিটি(CT-Current Transformer)

নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে যে এটি কারেন্ট মেজার করবে লাইনের।
কিন্তু লাইনের কারেন্ট তো অনেক বেশি, কিভাবে কি করবে?
এটি একটি স্টেপ আপ ট্রান্সফর্মার, যার সেকেন্ডারিতে কয়েলের পাকসংখ্যা অনেক বেশি, ফলে কারেন্টের মান অনেক কম হয় রেশিও অনুপাতে।
CT connection


যেমন : একটি সিটির মান ১০০/৫A, লেখা আছে, এ থেকে বুঝা যায় যে, প্রাইমারিতে কারেন্ট যদি ১০০ অ্যাম্পিয়ার হয় তাহলে।সেকেন্ডারিতে কারেন্টের মান কমে আসবে ৫ অ্যাম্পিয়ার এ। এখানে ট্রান্সফর্মেশন রেশিও ২০। ফলে খুব সহজেই লাইনের কারেন্ট মেজার করা সম্ভব।

- পিটি(PT-Potential Transformer)

এটি হাইভোল্টেজ লাইনের ভোল্টেজ মেজার করার জন্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
স্টেপ ডাউন ট্রান্সফর্মার, ফলে প্রাইমারিতে পাক সংখ্যা বেশি সেকেন্ডারিতে কম, সেহেতু সেকেন্ডারিতে ভোল্টেজ ইন্ডিউসড ও হবে কম,  যা সহজেই মাপযোগ্য।
PT connection


একটি পিটির রেটিং ৬৬কেভি/১১০ভোল্ট, এ থেকে বুঝা যায়,  প্রাইমারিতে ৬৬কেভি পাওয়া গেলে সেকেন্ডারিতে ১১০ ভোল্ট পাওয়া যাবে, ট্রান্সফর্মেশন রেশিও- ৬০০.

সিটি 5P 20  30VAদ্বারা কি বুঝায়?
5 দ্বারা বুঝায় সিটির অ্যাকুরেসির মান।P দ্বারা বুঝায় এটি একটি প্রটেক্টিভ সিটি।পরের ২০ সংখ্যাটি দ্বারা বুঝায়, সেকেন্ডারিতে প্রাইমারির ২০ গুন কারেন্ট গেলেও সেটা সিটি সেন্স করতে পারবে।
অ্যাকুরেসি লিমিট ফ্যাক্টর বলে একে। এর দ্বারা ফল্ট কারেন্ট এর মানও  বুঝায়।
আর 30VA দ্বারা সিটির বার্ডেন বুঝায়,  সেকেন্ডারিতে কানেক্টেড থাকা সর্বোচ্চ লোড কেই বার্ডেন বলে, যা প্রাইমারি থেকে সেকেন্ডারিকে আলাদা করে রাখে।

-  সিটি দুই প্রকার
১  মেজারিং সিটি
২ প্রটেক্টিভ সিটি

সিটি পিটি তে যে সকল রিলে ব্যবহার করা হয় তা হল:
IDMT, DIFFERENTIAL TIME RELAY, DIRECTIONAL RELAY etc.

কানেকশন:
সিটি সিরিজে
আর পিটি প্যারালালে কানেক্ট করা হয়।

সিটি মেজার করে কারেন্ট, স্টেপ আপ ট্রান্সফর্মার
আর পিটি মেজার করে ভোল্টেজ, স্টেপ ডাউন ট্রান্সফর্মার।

Power Blackout: অন্ধকারে নিমজ্জিত দেশ

Electrometa-welcome here


ব্ল্যাক আউট: 

আমাদের দেশে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে সারাদেশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। টানা ১২ ঘণ্টা পুরো দেশে বিদ্যু
ছিল না। দেশজুড়ে এই ভয়াবহ বিদ্যুবিপর্যয় ব্ল্যাক আউট নামে পরিচিত।

২০০৭-এর পর এতো বড় বিদ্যুত্‍ বিপর্যয় হয়নি বাংলাদেশে। সে বছর একটি শক্তিশালী সাইক্লোনের জেরে ন্যাশনাল গ্রিড খারাপ হয়ে যায়। অন্ধকার হয়ে যায় গোটা দেশ।

২০১৪ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হল ২০১৪ সালের একটি শিল্প বিপর্যয়, যেটিতে সারা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা বাংলাদেশ সময় নভেম্বর ১-এর সকাল ১১.৩০ থেকে নভেম্বর ২-এর মাঝ রাত পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এই বিপর্যয়টি বিশ্বের অনেক বড় ও ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়সমূহের মধ্যেতে ১টি বড় যাতে ১৫কোটি নাগরিকরা আক্রান্ত হন।

প্রথমতঃ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৯টি, নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬টি ইউনিটই বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভেড়ামায় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের ত্রুটির কারণে সবকটি ইউনিটে একযোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় দেখা দেয়। কুষ্টিয়া থেকে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, বেলা ১১টা ২৯ মিনিটে ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগ এলাকায় জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর "ব্ল্যাক আউট" বা "বিদ্যুৎ বিপর্যয়" হয়। ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সরবরাহ লাইনের সংযোগস্থলে ক্রুটি দেখা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

একটি দেশের গ্রীড সিস্টেমকে জাতীয় গ্রীড বলা হয়। আর জাতীয় গ্রীড সাধারনত ইনফাইনেট (Infinate) বাস হয়। যে বাসের ভোল্টেজ বা ফ্রিকুয়েন্সি লোড বৃদ্ধির কারনে বৃদ্ধি পায়না, সেটাকেই ইনফাইনেট বাস বলে। আমাদের দেশের বানিজ্যিক ফ্রিকুয়েন্সি ৫০ হার্টজ। কোন কারনে যেন এটা না কমে, সেজন্যই প্রতিটি দেশেই ইনফাইনেট বাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটা দেশের গ্রীড সিস্টেম বিভিন্ন পাওয়ার প্লান্টের সাথে সংযুক্ত। এছাড়া অন্য দেশের গ্রীড সিস্টেম বা লাইনের সাথেও যুক্ত থাকে। এখন যদি আপনি পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া হঠাৎ করে অন্য দেশের গ্রীড বন্ধ করে েন, তাহলে ফুল লোডের চাপ জাতীয় গ্রীডের উপর পরে। হঠাৎ করে লোড অনেক বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে ফ্রিকুয়েন্সি কমে যায়। আমদের জেনারেটর এমন ভাবে সংযোগ করা থাকে, যেন নির্দিষ্ট ফ্রিকুয়েন্সির নিচে নামলেই জেনারেটর অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। এমনটাই হয়েছিল সেদিন। হঠাৎ লোড বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে ফ্রিকুয়েন্সি কমে যায়। তাই পাওয়ার প্লান্টের জেনারেটর গুলো অটোমেটিক বন্ধ হতে থাকে। যেহেতু সব জেনারেটর গ্রীডের মাধ্যমে ইন্টারকানেক্ট, তাই আস্তে আস্তে সমগ্র বাংলাদেশেরই পাওয়ার কাট হয়ে যায়।
তাই কখনোই হঠাৎ করে লোড না কমিয়ে পাওয়ার কাট করা হয়না। সাধারন তথ্য মতে ভারতীয় গ্রীড অংশে হঠাৎ করে লাইন অফ করে দেওয়ার কারনে এমনটি ঘটেছিল।


 কোথাও গ্রীড থেকে দ্রুত বিদ্যুত্ কমিয়ে ফেললে অন্যান্য নিয়ন্ত্রণ সেন্টারগুলোতে কারেন্ট সরবরাহে দ্রুত লোড ম্যানেজ (সরবরাহে Re-configure করা) করতে হয়। না হলে যে অসাম্য প্রবাহ সৃষ্টি হয় তাতে প্রতিটি প্লান্টে মটর উল্টাদিকে ঘুরতে শুরু করে এবং প্লান্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেটা রোধ করতে প্রতিটি প্লান্টে সেফটি সার্কিট ব্রেকার থাকে যা প্লান্টকে রক্ষা করতে গিয়ে ট্রিপ করে বা আপনা থেকে প্লান্টকে বন্ধ করে দেয়। এরকম পরিস্থিতিতে প্লান্ট বন্ধ না হলে ফোর্স শাট ডাউন দিতে হয়। ন্যাশনাল গ্রীড থেকে প্লান্টকে বিচ্ছিন্ন করে প্লান্ট চালু রাখার পদ্ধতি আছে। সেটা করতে গেলে প্লান্ট থেকে বিদ্যুত্ হঠাত্ আঞ্চলিক গ্রীডে সরবরাহ দেয়া যায়। তাতে বড় আকারের প্লান্ট হলে তার বিদ্যুত্ সরবরাহ ব্যবস্থায় দ্রুত কনফিগার করতে হয়, না হলে অসাম্য সৃষ্টি হয়ে যাবে। সেরূপ পরিস্থিতিতে প্লান্ট ট্রিপ করানো বা বন্ধ করা উত্তম পন্থা মনে করে। ছোট খাট প্লান্ট বন্ধ হলে বা হঠাত্ চালু করলে এরকম কোন সমস্যা হয় না। এখনকার দিনে এরূপ পরিস্থিতি দ্রুত ম্যানেজ করার সেফটি ব্যবস্থা ও দ্রুত রি-কনফিগার করার ব্যবস্থা অনেক দেশে করা হয়েছে। ন্যাশনাল গ্রীডের ক্যাপাসিটি আমাদের দেশে ২৩০ ও ১৩২ কেভিএ লাইন। সেটা অনেক দেশেই ৪০০ কেভিএ। বাংলাদেশে ৪০০ কেভিএ করা হচ্ছে।

কারণঃ
এসব ব্লাক আউট কীজন্য হয়। দি এডিশন ইলেক্ট্রিক ইনষ্টিটিউট বলে একটি আমেরিকান সংস্থা তাদের গবেষণায় বলেছে, ব্লাক আউট এর ৭০% ঘটে প্রকৃতিগত কারণে। ১১% ঘটে বড় কোন পাখি, কোন পিলারের বা গাছ পড়ে বা হিউম্যান এর কারণে। বাকিটা টেকনিক্যাল কারণে।
কোন কোন দেশে একাধিক গ্রীড থাকলেও প্রধানত একটি গ্রীডই সব দেশে থাকে। এর
সাথে সকল উত্পাদন প্লান্টগুলো প্যারালালি কানেকটেড থাকে।

বিভিন্ন প্লান্টে বিদ্যুত্ উত্পাদন যা হয় তা জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ হয়। সেটা এক মহানদীর মত। সেখান থেকে বিভিন্ন সাব-ষ্টেশন এর বিশাল ট্রান্সফরমার দ্বারা প্রয়োজনমত বিদ্যুত্ প্রবাহ নেয়া হয়। প্রধান লাইনগুলো থাকে ২৩০ কেভি লাইনের, থাকে ১৩২ কেভি লাইনের। এখন জাতীয় গ্রীড লাইন ৪০০ কেভির করা হচ্ছে। যদিও এখন যা বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে তার কয়েকগুণ বিদ্যুত্ সরবরাহেও জাতীয় গ্রীডের বিদ্যমান লাইন পর্যাপ্ত। জাতীয় গ্রীড থেকে ১৩২ কেভি বা ৩৩ কেভি বা ১১ কেভি লাইন দ্বারা আঞ্চলিক প্রবাহ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়। গ্রাহক পর্যায়ে ৪২০ ভোল্ট বা ২২০ ভোল্ট লাইন থেকেও বিদ্যুত্ দেয়া হয়। বড় গ্রাহক বলে ১১ কেভি লাইন থেকে দেয়া হয়। এই পুরো ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থাটি পরস্পরের সাথে যুক্ত। এখানে কোথাও ব্যবহার কমে গেলে সেখান বিদ্যুত্ সরিয়ে যেখানে ব্যবহার বেশি সেখানে নেয়া হয়। কখনো ব্যবহার কমলে কোন কোন প্লান্ট বন্ধ রাখা হয়। পিক আওয়ারে ব্যবহার দ্রুত বাড়তে থাকলে পিকিং প্লান্টগুলো চালু করা হয়।

 ব্যবহার ও সরবরাহে বিশাল কোন তারতম্য ঘটলে সেখানে ফ্রিক্যুয়েন্সিতে বড় হেরফের হলে প্লান্টের ক্ষতি হবে। তখন কোন কোন লাইন ও প্লান্টকে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে সেফটি সার্কিট ব্রেকার অফ হয়ে যাবে।

গ্রীড ফেইল করলেও তা দ্রুত কার্যকর করাও একটি বড় কাজ। প্রত্যেকটি জেনারেটিং ইউনিট চালু করতেও একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুত্ লাগে। যেমন তাপ বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোতে পানি গরম করে তার বাষ্প দ্বারা ম্যাগনেটিক হুইল ঘুরিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা হয়। সে পর্যন্ত যেতে অনেক মটর চালু করতে হবে। 

সে বিদ্যুতের ব্যবস্থাটি উক্ত প্লান্টে আলাদা ডিজেল জেনারেটরে থাকতে হয়। পানি বিদ্যুতের সে হুইলটি ঘুরায় পানির চাপ দ্বারা। সেজন্য সেটা ট্রিপ করলে দ্রুত চালু করা সম্ভব। কিন্তু তাপ বিদ্যুত্ কেন্দ্রে দীর্ঘদিন এক নাগাড়ে চললে ব্যাক আপ জেনারেটর চালানোর জন্য তা তৈরি থাকে না অনেক সময়, তার ড্রাইভারকেও খুঁজে পেতে বিলম্ব হয়।

 সেজন্য গ্রীড বিপর্যয় হলে সকল প্লান্ট চালু করে লোড ম্যানেজ করে একটি ভারসাম্য পর্যায়ে যেতে সময় লাগে। তারপরও ১লা নভেম্বরে বিকেলেই সিলেটের আরইবির তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী নূরুল হক বললেন, বিকাল চারটার আগেই তারা আঞ্চলিক গ্রীড চালু করে বিদ্যুত্ দিতে পেরেছেন। 

যদিও সেদিন বিকাল ৪টায়ও আবার এরকম চালু হওয়া সব বন্ধ হয়ে যায় পুনঃট্রিপ করলে। কিন্তু সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মত সেনসেটিভ জায়গায় বিদ্যুত্ দিতে কেন দেরি হলো সে প্রশ্নে পিডিবির এক নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এখানে লোড ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। পিজিসিবি প্রায় ৯০% লোড ব্যবস্থা করে। তার সাথে আছে আরইবি, ডেসকো, ডিপিডিসি। এগুলোর মধ্যে মাঝে মাঝে ঠিকমত সমন্বয়ের অভাব ঘটে। সেজন্য সেনসেটিভ স্থানগুলোতে পুরো লোডে চালানোর মত জেনারেটিং ইউনিট ব্যাক আপ পাওয়ার হিসাবে থাকতে হবে।


Featured post

BPSC Preparation(Technical _9Th grade)

Electrometa-welcome here BPSC JOB Sector & Its preparation. প্রথমেই বলে নেই BPSC মানে বাংলাদেশ পাব্লিক সার্ভিস কমিশন, যাকে দেশের নাগর...

Popular Ones