৪ বিলিয়ন বছর হয়ে গেলো পৃথিবীতে কোষ এর উপস্থিতির,
তাই বলা যায়, পৃথিবীতে তো অনেক হলো জীবনধারণের!
চলুন
এবার মঙ্গল থেকে ঘুরে আসা যাক, তবে তার আগে কিছু কথা বলে রাখা ভালো - সম্প্রতি এক পরীক্ষায়
দেখা গেছে, আমাদের
এই পৃথিবী কিন্তু আরো ১.৭৫ বিলিয়ন বছর মানব জাতিকে তার বুকে ধারণ করতে পারবে যদি না
কোনো পারমাণবিক দূর্ঘটনা,গ্রহাণুর আঘাত কিংবা বিশাল ধূমকেতুর আক্রমণ না আসে।
আবার,
১.৭৫-৩.২৫ বিলিয়ন বছরের মধ্যে পৃথিবী সৌরজগতের বাসযোগ্য অঞ্চল
থেকে উষ্ণ অঞ্চল এর দিকে অনেকটাই এগিয়ে যাবে ফলে এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বসবাসের অযোগ্য
হয়ে পড়বে। কিন্তু তারপর কি হবে????
পৃথিবীতে তাহলে কি থাকা যাবে না আর????
-
যাবে .
কিন্তু সেটা অবশ্যই এখনকার মত আরামদায়ক হবে না
তাহলে উপায় কি???
সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য উপায় হল - নতুন গ্রহ খুঁজে বের করা যেখানে পৃথিবীর আমেজ বজায়
আছে। সেলক্ষে,
এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে বেশ কিছু বসবাসযোগ্য গ্রহের তালিকা
আছে,
কিন্তু একমাএ মঙ্গল বাদে বাকি গুলো বহু আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত
যেখানে পৌছাতে জীবনকাল পেরিয়ে যাবে। তাহলে আজকের আর্টিকেল এ মঙ্গল নিয়েই আলাপ করা যাক,
চলুন জেনে নেই- মঙ্গল
কতটা উপযোগী আমাদের জন্য। সর্বশেষ বেশকিছু গবেষণার প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে
এখানে জীবনের অস্তিত্ব ছিল, কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশের কারণে টিকে থাকা সম্ভব হয়নি,
কিন্তু এর ফসিল উদ্ধার করা গেছে, বিশাল জলাধার এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে বিভিন্ন প্রাণীর
ফসিল ও পাওয়া গেছে যা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের ব্যাপার।
কিন্তু আমাদের কিছু বিষয় জানা লাগবে কেনো মঙ্গল এতকাল ধরে বসবাসের
অযোগ্য --
১. দুরত্ব: ৫৫ মিলিয়ন কি:মি-এতই দুরত্ব যে আলোর বেগে পৃথিবী থেকে মেসেজ
পাঠালে সেটি মঙ্গলে পৌছাবে ২০ মিনিটস পরে যা কিনা সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সমস্যা
ঘটাবে
২. বদ্ধ বাসস্থান : ফ্রেশ এয়ার কথাটি ভুলে থাকা লাগবে সেখানে গেলে কেননা
সেখানে বায়ুমণ্ডল পাথুরে প্লাস উত্তপ্ত যা কিনা ফুসফুস গলিয়ে দিতে সক্ষম ফলে মানুষকে
সবসময় স্পেশালভাবে বানানো আবদ্ধ ঘরে থাকা লাগবে।
৩.
বদ্ধ জলবায়ু : অবশ্যই এটি বদ্ধ হবে কেননা গাছপালা নাই,প্রাণির বিস্তার নাই ফলে বুঝতেই পারছেন যে কি হবে।
যেকোন প্রাণঘাতি রোগের জীবাণুর বিস্তার খুব দ্রুত ঘটবে,এক ধাক্কায় মঙ্গলে জীবনের সমাপ্তি ঘটে যাবে।
৪.মাইক্রোগ্রাভিটির
প্রভাব: যার ফলে মানু্ষের হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়, দেহের তরল পদার্থের দিক পরিবর্তিত হয়।
সামান্য একটা উদাহরণ দেই: পৃথিবীতে যদি ২০কেজি ডাম্বেল নিয়ে
কেউ ব্যায়াম করে পৃথিবীর গ্রাভিটির ১০% এ সেখানে ২০০ কেজি ডাম্বেল দরকার হবে যা দেহের
উপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করবে।
৫.
মহাকাশের ক্ষতিকর বিকিরণ : একে ডীপ স্পেস রেডিয়েশন বলা হয়ে থাকে
। এটি প্রতিহত করার জন্য শিল্ড ব্যবহার করা হয়।
পৃথিবীর বায়ুমন্ডল থেকে যত দূরে সরে যাওয়া হয় ততই এর পরিমাণ বাড়তে থাকে যা দেহের
উপর ক্ষতিকর প্রভাব রাখে যেমন: স্নায়ুরোগ, ক্যান্সারজনিত রোগ, এবং নিউরোরিসেপ্টর গুলো তাদের কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
মঙ্গলে যেতে হলে বিশাল পরিমাণ রেডিয়েশন এর মুখোমুখি হতে হবে
যা কিনা দেহের উপর সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে
এবং জেনেটিক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম।
আচ্ছা
সবই বুঝলাম,কিন্তু
এ সব থেকে কি মুক্তি পাবো না কিংবা পৃথিবী ধ্বংস হলেই কি মানবজাতি বিলীন হয়ে যাবে?
উত্তর : না সেটা না।
ততদিনে
অন্য গ্রহে মানবজাতি বসবাস শুরু করবে, হোক সেটা মঙ্গল কিংবা বুধ বা শনি।
ইতিমধ্যে মঙ্গলে পাঠানো রোবট "কিউরিওসিটি" বেশ কিছু
নমুনা পাঠিয়েছে নাসার কাছে ,যা প্রমাণ করে, মঙ্গলে প্রাণের বিস্তার অনেক আগে থেকেই।
সাম্প্রতিক
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কর্তৃক একটি গবেষণায় দেখা গেছে,
মঙ্গলের খনিজ সম্পদ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুজীব এর উপস্থিতি প্রমাণ
করে। পৃথিবীতে
প্রাণের বিস্তার শুরু হওয়ার সময় যে পরিবেশ ছিল, সে পরিবেশে যে সকল অনুজীব জন্মেছিল মঙ্গলেও ঠিক তেমনি দেখা যাচ্ছে,
যা প্রমাণ করে মঙ্গল আমাদের দ্বিতীয় পৃথিবী হওয়ার পথে একধাপ
এগিয়ে গেলো।
কিন্তু শুধু এভাবেই হলে কি হয়ে যাবে? নাহ, সব এতো সহজেই হবার না।
পুরো মঙ্গল গ্রহ কে সিস্টেমাইজড করতে হবে, বায়ুমণ্ডল এ অক্সিজেন বাড়াতে হবে,গাছপালা যাতে জন্মাতে পারে সেজন্য আলোবাতাস এর পর্যাপ্ত সুযোগ
রাখতে হবে, পাথুরে
মাটিতে চাষাবাদের সুযোগ তৈরি করতে হবে, রেডিয়েশন এর মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য প্রোটেক্টিভ লেয়ার বানাতে
হবে মোদ্দা কথা নতুন একটা পৃথিবী বানাতে হবে।
সেটা প্রচুর ব্যয়বহুল এবং এতে যাওয়া সবাই অ্যাফোর্ড নাও করতে
পারে,
এবং এতো কিছু বানাতে হবে, সেটা এত দূরত্ব অতিক্রম করে বয়ে নিয়ে যাওয়া লাগবে,
সেটআপ করা লাগবে।
অনেক
সময়ের ব্যাপার, প্রায়
৭০-১০০ বছরের ব্যাপার।
ততদিনে
হবে কিনা, বিজ্ঞানীরাও সন্দিহান এ বিষয়ে। তবুও আশায় বুক বাধে মানুষ সেলক্ষে কাজ করে যায়।
আশা করা যায় মঙ্গলেই আমাদের মঙ্গল লুকিয়ে আছে।
No comments:
Post a Comment